নীল ও রূপার দেখা হয়েছিল পাঁচ বছর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন তারা শুধুই বন্ধু ছিল, কিন্তু সেই বন্ধুত্বের মাঝেই একটি অদৃশ্য ভালোবাসা গড়ে উঠছিল। নীল ছিল মেধাবী, দয়ালু, আর রূপা ছিল প্রাণোচ্ছল ও হাসিখুশি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষে, তাদের জীবন আলাদা পথে চলে যায়। নীল পাড়ি জমায় বিদেশে তার ক্যারিয়ার গড়তে, আর রূপা থেকে যায় নিজের শহরে।
বিদেশে থাকাকালীন নীল বুঝতে পারে, সে রূপাকে ভালোবেসে ফেলেছে। প্রতিদিন তার সঙ্গে কথা না বললে যেন দিনটাই পূর্ণ হয় না। কিন্তু দূরত্বের কারণে সে কখনোই রূপাকে তার মনের কথা বলতে পারেনি। রূপাও নীলকে মনে মনে ভালোবাসত, কিন্তু তার মনের কথা কখনোই প্রকাশ করেনি।
পাঁচ বছর পরে, একদিন হঠাৎই নীলের কাছে রূপার একটি মেসেজ আসে, "তুমি কেমন আছো, নীল?"। নীলের হৃদয় তখন যেন এক অদ্ভুত উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে। তারা আবার কথা বলা শুরু করে, এবং সেই পুরনো দিনগুলোর মতোই একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে শুরু করে, যদিও সেটা ভার্চুয়ালি।
দিনগুলো যখন এভাবে কাটতে থাকে, নীল একদিন সাহস করে বলে ফেলে, "রূপা, আমি তোকে আজও ভালোবাসি। অনেকদিন ধরেই বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কখনোই সাহস পাইনি। তুই কি আমায় এখনও বন্ধু হিসেবে দেখিস, নাকি তোর মনেও কিছু আছে?"
রূপা তখন এক মুহূর্তের জন্য চুপ হয়ে যায়। তারপর সে হেসে বলে, "আমি তো তোকে সেই প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসি, নীল। কিন্তু ভেবেছিলাম, তুই আমাকে শুধুই বন্ধু ভাবিস।"
নীলের হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে। সে বলে, "তাহলে কি আমরা নতুন করে শুরু করতে পারি? আমি এখনই দেশে ফিরতে পারব না, কিন্তু তুই যদি রাজি থাকিস, আমরা একে অপরকে সময় দেব। আমি দেশে ফিরে আসলেই তোকে বিয়ে করব।"
রূপা একটু হাসি দিয়ে বলে, "এত তাড়াতাড়ি বিয়ের কথা ভাবছিস?"
নীল জবাবে বলে, "তাড়াতাড়ি নয়, রূপা। এই ভালোবাসা তো অনেকদিনের। শুধু বলা হয়নি।"
সেদিনের পর থেকে নীল আর রূপার সম্পর্ক নতুনভাবে গড়ে ওঠে। তারা দূরত্বেও একে অপরকে আরও ভালোভাবে জানতে শুরু করে। নীল দেশে ফিরলে, তাদের বিয়ে হয় এবং সেই ভালোবাসা, যা এতদিন অপ্রকাশিত ছিল, সেটাই তাদের জীবনকে পূর্ণ করে তোলে।
তাদের গল্প প্রমাণ করে, ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, সময় বা দূরত্ব কোনো বাধা হতে পারে না।